নারীর গল্প || মুতাকাব্বির মাসুদ
শীতের অলস কুয়াশায় নারী-ভেজা ভেজা আঁচলে
পেঁচার যন্ত্রণাকাতর ডানার নিচে
আদৃত তমস্বিনীর বুকে নিজেকে সমর্পিত করে
চাঁদের বৈধব্য আলোয়
এক ঝাঁক তমোমণি ক্লান্ত ডানায় তমোঘ্ন নিয়ে উড়ে রহস্যময় তিমির হলুদবনে!
চোখের বয়সী চাতালে নির্ঘুম রাত আর আমি
এক কালো নারীর গল্প বলি স্বল্প মাত্রায়
কালো নিশীথের চোরাগলিতে
নারী সেতো নারী নয়
যেনো 'এ ফোর' সাইজের সাদা কাগজের এক পৃষ্ঠা
হাতের কাছে যত রঙ সব দিয়ে আঁচড় কাটি
যেমন খুশি তেমন
সাদায় সাদা কিংবা হলুদ গাঁদা, লাল-সবুজ
নীল-বেগুনি-আহ্নিক থেকে বার্ষিকগতি
সাগর-নদীর ঢেউ
ষড়ঋতুর সবকটা রূপের উজ্জ্বল অনিবার্য স্কেচ
জীবনানন্দের 'বিদর্ভ নগর' কিংবা পরাবাস্তব
কোনো শহরের 'এন্টিক' চিত্রকর্ম
আবার একিলিসের বীরত্ব বা ফিলিপসের
আগুনপোড়া প্রেমের শহর
রোদের গন্ধে পোড়া এক মানবিক শরীর
কালোকোলো বসন্তদাগের মতো কুৎসিত অবয়ব
দৃশ্যমান চিত্রের বিমূর্ত চরিত্রে মন চায় যেমন
অকলঙ্ক সাধুতুলির অস্পৃশ্য জিহ্বা দিয়ে
নগ্ন দাসীর দেহে চেটেচেটে এঁকে দেই
মনগড়া যত কলঙ্ক কল্পনা
সহে যায় সবকিছু-নারীদেহ মানুষ তো নয়!
সেতো এক অস্পৃশ্য দুমড়ানো-মোচড়ানো
ব্যবহার শেষে ময়লা ঠোঙ্গার মতো
ছুড়ে ফেলা কাগজের দলা!
প্রমীলা ভোরের তফসির জানা নেই
চোখের পাতায় তরল রোদের বায়বীয় স্পর্শ
অদ্ভুত এক জিরাফ এসে রাত আর আমার
মাঝখানে গল্পকে থামিয়ে দেয়
নারী আর নিশি পুনঃ মিশে যায় অদ্ভুত আঁধারে
চেয়ে দেখি এক বেহায়া নিশাচর
তাঁদের ছায়ায় গল্পের শেষটাই বলছে!